ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : মহামারি করোনার মহাবিপর্যের মধ্যেই অল্প সময়ে কম পুঁজিতে বেশি লাভ হয় বলে করলা চাষে ঝুঁকেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের চাষিরা। সদর উপজেলায় চলতি মৌসুমে গতবারের তুলনায় করলার ফলনও হয়েছে দ্বিগুণ। পাশাপাশি এবার চাষিরা দামও পেয়েছেন ভালো ।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষ্ণ রায় জানান, চলতি মৌসুমে সদর উপজেলায় ২২০ হেক্টর জমিতে করলা চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ফলন হয়েছে ১৭০০০ কেজি। উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা চাষিদের সহায়তাসহ পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।
চাষিদের কাছ থেকে করলা কিনে এ অঞ্চলের সবজির স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চলে যাচ্ছে ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম বরিশালসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে।
সদর উপজেলার রুহিয়ার পাইকারি সবজি ব্যবসায়ী মোঃ হাবুল জানায়, পাইকারি বাজারে প্রতি মণ করলা বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার টাকায়। রুহিয়া বাংলা বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি করলা বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সদর উপজেলার রাজাগাঁও, আসান নগর, চাপাতি, রাজারামপুর খড়িবাড়ী, দক্ষিন বঠিনা, উত্তর বঠিনা, ঝলঝলি, ফরিদপুর, বড়দেশ্বরী, ধর্মপুর, বোয়ালিয়া চোপড়াপাড়া সহ রুহিয়ার বিভিন্ন এলাকার প্রায় ২০০ চাষি করলা চাষ করেছেন। সাধারণত বছরে দুবার খেতে করলা চাষ করা যায় বলে চাষিরা জানান। ফলন ভালো হওয়ায় এই সবজি ক্রেতাদের হাতের নাগালে রয়েছে।
পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, থানার বাসিন্দাদের চাহিদা মেটাতে কয়েক বছর আগেও বিভিন্ন এলাকা থেকে করলা আনতে হতো। কয়েক বছর ধরে রুহিয়ায় উৎপাদিত করলা বিক্রি হচ্ছে বাজারে। আগে প্রতি কেজি করলা ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়।
সদর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, আগস্ট থেকে অক্টোবর ও অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাসে খেতে দুবার করলা চাষ করা যায়। সাধারণত রোপণের ৪০ থেকে ৫০ দিনের মধ্যে ফলন পাওয়া যায়। মাত্র দেড় মাসে ফলন পাওয়া যায় বলে এই ফসলের জনপ্রিয়তা বাড়ছে চাষিদের মধ্যে। উপজেলায় করলা চাষ দিন দিনই জনপ্রিয় হচ্ছে।
ঠাকুরগাঁওয়ের বড়দেশ্বরী গ্রামের বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক প্রাপ্ত ও বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনকারী নিরাপদ কৃষি খামারে “করলা” বাজারজাত শুরু করেছেন বলে জানান, পদক প্রাপ্ত মোঃ মেহেদী হাসান উল্লাহ। তিনি আরো জানিয়েছেন, চার পাঁচ বছর ধরে করলা চাষ করে লাভবান হচ্ছি। আমার দেখাদেখি গ্রামের শতাধিক চাষি করলা চাষে ঝুঁকছেন।
একই এলাকার চাষি মোতাহার হোসেন বলেন, ‘চলতি মৌসুমে ৩৩ শতক জমিতে মাত্র ১২ হাজার টাকা খরচ করে করলা চাষ করেছি। রোগবালাই আক্রমণ না করলে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা পাওয়ার আশা করছি।